৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা সরিয়ে নিতে তালেবানের হুশিয়ারির পর সে দেশ থেকে সেনা সরিয়ে নিতে জোরেশোরে কাজ করছে পশ্চিমা দেশগুলো।
যুক্তরাষ্ট্র সেনা সরিয়ে নিতে চাইলেও নেটোর ইউরোপীয় মিত্রদের পক্ষ থেকে সময়সীমা বাড়ানোর চাপ রয়েছে। মিত্রদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৩১ আগস্টের মধ্যেই সব সেনা আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে অটল।
এই প্রেক্ষাপটে তালেবান কাবুল দখল করার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ১০ দিনে ইতিহাসের অন্যতম বিশাল প্রত্যাহার প্রক্রিয়া পরিচালনা করেছে, এই সময়ে তারা ৮৮ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে, যাদের মধ্যে বুধবার পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার জনকে বের করে আনা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, প্রতি ৩৯ মিনিটে একটি ফ্লাইট ওঠানামা করার মতো গতিতে কাজ চলছে।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, বুধবার প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে আফগান প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার বিকল্প পরিকল্পনা এবং আইএস-কাবুল শাখার হুমকি সম্পর্কে জানানো হয়েছে।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তরও জানিয়েছে, আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল রয়েছে এবং সেখানে ‘সন্ত্রাসী হামলার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে’।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছেন, মধ্য অগাস্ট থেকে কমপক্ষে সাড়ে চার হাজার মার্কিন নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং পররাষ্ট্র দপ্তর আফগানিস্তানে থাকা প্রায় দেড় হাজার নাগরিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিনকেন বলেন, আফগানিস্তান ছাড়তে চাওয়াদের সহযোগিতা করার জন্য কোনো সময়সীমা নেই, আমেরিকান ও অন্যদের জন্যও। ‘যত সময়ই লাগুক’ এটা চলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা তাদের সেনাদের প্রত্যাহার করার বিষয়ে মনোযোগী হবে ৩১ অগাস্ট সময়সীমা শেষ হওয়ার দুই দিন আগে থেকে।
তালেবান জানিয়েছে, বিদেশি সেনাদের এই মাসের মধ্যেই আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যেতে হবে। আফগানদের নিজ দেশ না ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। তারা অবশ্য এটাও বলেছে, যাদের অনুমতি থাকবে তারা পরে নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইটেও আফগানিস্তান ছাড়তে পারবে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে তালেবান বলেছে, এখন সেনা প্রত্যাহার না করে সময় বাড়ালে তা চুক্তি লঙ্ঘন হবে। যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য যদি আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার অব্যাহত রাখতে অতিরিক্ত সময় চায় তবে তালেবান তাতে সম্মতি দেবে কিনা-এমন প্রশ্নে মুখপাত্র সুহাইল শাহিন বলেন, অবশ্যই নয়; বরং এতে তাদের ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে।
এ মুখপাত্র বলেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের সব সেনা সদস্যকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে যে সময়সীমা দিয়েছিলেন অর্থাৎ ৩১ আগস্টের মধ্যে তা সম্পন্ন করতে হবে। যদি তারা সময় বাড়াতে চায় তবে বুঝতে হবে তাদের অন্য চিন্তা রয়েছে। কিন্তু আফগানিস্তানে বিদেশি সেনাদের আর প্রয়োজন নেই।
ওয়াশিংটনের ইউরোপীয় মিত্ররা জানিয়েছে, গত দুই দশকের যুদ্ধে যেসব আফগান নাগরিক তাদের সহযোগিতা করেছে তাদের অনেককেই ৩১ আগস্টের মধ্যে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না। তাদের অনেককেই হয়ত রেখেই যেতে হবে।