করোনা ভাইরাসের নিষ্ঠুরতায় আমেরিকার সব রাজ্যের সাথে মিশিগান রাজ্যও কার্যত অচল। করোনা ভাইরাসের এই প্রকোপ থেকে বাঁচতে মিশিগানের বাংলাদেশীরা বাধ্য হয়েই হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। এক রকম বন্দি অবস্থায় কর্মচাঞ্চল্য মানুষগুলো ঘরে বসে বসে দিন কাঠাচ্ছেন। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করছেন সম্প্রতি দেশ থেকে আসা শিশুসহ প্রাপ্ত বয়স্করা।যদিও সাম্প্রতিক সময়ে সরকার জনগণের জন্য বিভিন্ন উপায়ে আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছেন। তারপরেও বাংলাদেশী বংশদ্ভোত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোহাম্মদ হোসেন বাংলাদেশীদের পাশাপাশি আফ্রো-আমেরিকান মানুষদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন।
গত ১৬ মে চিলড্রেন ক্লিনিক অব মিশিগানের সকল চাকুরীজীবীদের উদ্যোগে শিশু খাদ্য সম্বলিত ২২০ টি খাবার প্যাকেট বিতরণ করেন।
এ ব্যাপারে ডাক্তার মোহাম্মদ হোসেন কে জিজ্ঞেস করলে বলেন,আমাদের বাংলাদেশী বংশদ্ভোত পরিবারগুলো ঘরে তৈরি করা খাবার খান কিন্তু আফ্রো- আমেরিকান মানুষগুলো নিজে খাবার তৈরি না করে বিশেষ করে রেস্তোরায় খাবার খায়। তাই আজকে তাদের জন্যই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে জনগণের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমার চিলড্রেন ক্লিনিক অব মিশিগানের চেম্বার সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিলাম। বিশেষ করে শিশু বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে আমরা বাংলাদেশী বা ভিন্ন কমিউনিটির মানুষের সাহাযার্থে আমিসহ আমার দুই সহকর্মী ডাঃ ফারজনা নুর (এফএনপি) ও ডাঃ রেশমী বৈষ্ণম( এফএনপি) এর সমন্বয়ে চব্বিশ ঘণ্টা টেলিমেডিসিন সেবা চালু রেখেছি।
লক ডাউনের প্রথম দিকে আমি ও আমার বন্ধু- বান্ধবের সহযোগিতায় শিশু বাচ্চাদের জন্য দুগ্ধজাত পণ্য,জরুরী ঔষধ সামগ্রী,পিডিয়ালাইট,গ্লাভস ও মাস্ক সহ ফ্যামিলি প্যাকেজ হিসেবে কয়েক শত প্যাকেট মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছিলাম। আগামীতেও আমরা আরও কিছু চিকিৎসা সামগ্রী বিতরণের চেষ্টা করছি। বর্তমানে আমরা বাংলাদেশী কমিউনিটি সহ ভিন্ন কমিউনিটির মানুষ সহ শিশু বাচ্চাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য বিগত তিন সপ্তাহ থেকে ক্লিনিক খোলা রেখেছি।
তিনি বলেন, মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা আমাদের পেশা। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও নিজের এবং সহকর্মীদের নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়েও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমার বিশ্বাস সামনের দিনগুলোতে মিশিগানের মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসবে।