লুইজিয়ানায় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আইডা’র তাণ্ডব, সাড়ে ৭ লাখের বেশি বাড়ি বিদ্যুৎহীন


যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণপূর্বের শহর লুইজিয়ানায় রবিবার ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার বেগের বাতাস নিয়ে আছড়ে পড়েছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আইডা।

ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডবে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে লুইজিয়ানার সবচেয়ে বড় শহর নিউ অরলেন্স। সেখানে কেবল কয়েকটি জেনারেটরই চালু আছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

পুরো লুইজিয়ানার সাড়ে ৭ লাখের বেশি বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। এসব ঘরে বিদ্যুৎ ফেরাতে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

সতর্কতার অংশ হিসেবে ঝড়ের পথে থাকা এলাকাগুলোর বেশিরভাগ লোককে আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

এরপরও যারা রয়ে গেছেন, তাদেরকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চার দেয়ালের ভেতর নিরাপদ কোথাও আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বাটন রুজের অ্যাসেনসন পারিসে ঘরের ওপর গাছ পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

আইডা এবার নিউ অরলেন্সের বন্যা প্রতিরোধ সক্ষমতার পরীক্ষা নেবে; ২০০৫ সালে হারিকেন ক্যাটরিনায় এক হাজার ৮০০র বেশি মানুষের মৃত্যুর পর শহরটির বন্যা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছিল।

শনিবার মেক্সিকো উপসাগরের উষ্ণ জলের সংস্পর্শে এসে আইডা বিপুল শক্তি সঞ্চয় করে লুইজিয়ানার দিকে ধেয়ে যায়।

নিউ অরলেন্সের দক্ষিণে রোববার এটি চার মাত্রার শক্তিশালী হারিকেন হয়ে আছড়ে পড়ে; পরে এটি খানিকটা দুর্বল হয়ে তিন মাত্রার হারিকেনে পরিণত হয়।

“আসছে দিন ও সপ্তাহগুলো যে আমাদের রাজ্য এবং অনেক অনেক মানুষের খুবই কঠিন সময় যাবে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। অনেকে এমন পরীক্ষায় পড়তে যাচ্ছেন, যা আজ কেবল আমরা কল্পনাই করতে পারি।

“তবে আমি এও বলতে পারি যে, এর চেয়ে বেশি প্রস্তুত আমরা আর কখনোই ছিলাম না,” বলেছেন লুইজিয়ানার গভর্নর জন বেল এডওয়ার্ডস।

তীব্র বাতাসে কাট অফ শহরের একটি হাসপাতালের ছাদের অংশবিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; তবে সেখানকার রোগীরা সবাই নিরাপদেই আছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

“বাড়ির ভেতরকার কোনো একটি ঘর বা এমন একটি ঘরে যান যেখানে জানালা নেই। এই সময়টাতে ওইখানেই থাকুন,” নিউ অরলেন্সের বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে করা এক টুইটে এমনটাই বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া বিভাগ (এনএসডব্লিউ)।

লুইজিয়ানার হাসপাতালগুলোতে এমনিতেই এ সময় কোভিড রোগীর ব্যাপক চাপ; সংক্রমণের হার বিবেচনায় রাজ্যটি এখন যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলোর মধ্যে তৃতীয়।

সাধারণত ঝড়ের পথে থাকা হাসপাতালগুলো থেকে রোগী ও কর্মীদের আগেই নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হলেও এবার তা করা যায়নি। ঝড়ের প্রভাব পড়বে না এমন এলাকা এমনকি আরও ভেতরের হাসপাতালগুলোতেও খুব বেশি শয্যা খালি নেই।

“এই রোগীদের নিয়ে যাওয়ার মতো কোনো জায়গা আমাদের কাছে নেই। না রাজ্যের ভেতর, না রাজ্যের বাইরে,” বলেছেন গভর্নর এডওয়ার্ডস।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *